আজ ১২ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৭শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সংগৃহীত ছবি

বিবাগী মনের গায়ক চলে যাওয়ার ৭ বছর


অনলাইন ডেস্কঃ ‘বিবাগী এই মন নিয়ে জন্ম আমার’ গান গাওয়া প্রখ্যাত সুরকার, সংগীত পরিচালক ও গায়ক লাকী আখান্দের ৭তম মৃত্যুবার্ষিকী ছিলো ২১ এপ্রিল। ২০১৭ সালের এই দিনে তিনি না ফেরার দেশে চলে যান। জীবদ্দশায় গুণী এ শিল্পী অসংখ্য জনপ্রিয় গান উপহার দিয়েছেন।

জন্মের পর তার নাম রাখা হয়েছিল এ টি আমিনুল হক। পরে মা নাম বদলে এ টি এম আমিনুল হাসান করেছিলেন। ম্যাট্রিকের সার্টিফিকেটেও এই নাম আছে। তবে যুদ্ধের সময় ভারতে গিয়ে তিনি ছদ্মনাম রাখেন—লাকী আনাম। এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছিলেন, নাম পাল্টানোর কারণ হিসেবে তিনি দেশে পরিবারের নিরাপত্তার বিষয়টি ভেবেছিলেন। কারণ মা-বাবা দেশে থাকেন। স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রে তার গান বাজে। পাকিস্তানি আর্মিরা কোনোভাবে আসল পরিচয় জানলে দেশে পরিবারের সদস্যদের মেরে ফেলতে পারে। পরে স্বাধীনতার পর দেশে ফিরে পূর্ব পুরুষের পদবি নিয়ে নিজের নাম রাখলেন লাকী আখান্দ।

স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতারকেন্দ্রের সংগীতশিল্পীর ভূমিকায় বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে যোগ দেন এই কণ্ঠযোদ্ধা। সেখানে তার গানের মধ্যে ছিলো ‘জন্মভূমি বাংলা মাগো একটি কথা শুধাই তোমারে’, ‘ওই চেয়ে দেখো পুব আকাশ ফিকে হলো, ভোর হলো, ভোর হলো পথের আঁধার আর নাই’, ‘আমরা গেরিলা, আমরা গেরিলা মুজিবর, মুজিবর, মুজিবর’ গানগুলো উল্লেখযোগ্য।

তার অন্যান্য শ্রেষ্ঠ গানগুলোর মধ্যে রয়েছে- ‘এই নীল মনিহার’, ‘আবার এলো যে সন্ধ্যা’, ‘আমায় ডেকো না’, ‘মামনিয়া’, ‘আগে যদি জানতাম’, ‘হৃদয় আমার’।

নিজের কণ্ঠসহ অন্যের জন্য গান তৈরি করে তিনি হয়েছিলেন জনপ্রিয়। লাকী আখান্দের প্রথম সলো অ্যালবাম ‘লাকী আখান্দ’। ১৯৮৪ সালে সারগামের ব্যানারে এটি প্রকাশ হয়। তিনি ব্যান্ড দল ‘হ্যাপি টাচ’-এরও সদস্য ছিলেন।

আরও পড়ুন সংগীতশিল্পী আকবর আর নেই

লাকী জন্মগ্রহণ করেনছিলেন ১৯৫৬ সালের ৭ জুন। ৫ বছর বয়সেই তিনি তার বাবার কাছ থেকে সংগীতে নিয়েছেন হাতেখড়ি। লাকী আখান্দ ১৯৬৩-১৯৬৭ সাল পর্যন্ত টেলিভিশন এবং রেডিওতে শিশু শিল্পী হিসেবে সংগীতবিষয়ক অনুষ্ঠানে অংশ নেন। মাত্র ১৪ বছর বয়সেই এইচএমভি পাকিস্তানের সুরকার এবং ১৬ বছর বয়সে এইচএমভি ভারতের সংগীত পরিচালক হিসেবে নিজের নাম যুক্ত করেন। সর্বশেষ তিনি বাংলাদেশ বেতারের পরিচালক (সংগীত) হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

লাকী আখন্দ অন্যান্য যেসব শিল্পীর গান রচনা ও সংগীতায়োজন করেছেন, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- ‘যেখানে সীমান্ত তোমার’ (কুমার বিশ্বজিৎ), ‘কবিতা পড়ার প্রহর এসেছে’ (সামিনা চৌধুরী), ‘আবার এলো যে সন্ধ্যা’ (হ্যাপী আখান্দ), ‘কে বাঁশি বাজায় রে’ (হ্যাপী আখান্দ), ‘কী করে বললে তুমি’, ‘লিখতে পারি না কোনো গান’, ‘ভালোবেসে চলে যেও না’ প্রভৃতি।

তথ্যসূত্র: সংগৃহীত


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর